''জোড়াতালি, এক বিষয় ছেড়ে অন্য বিষয়ে লেখা''
সারাদিন কত রকমের ভাবনা মাথায় ঘুরপাক করে। কত কিছু লিখব লিখব করি। রাতে যখন লিখতে বসি তখন সব হারিয়ে ফেলি। আবার এমনো হয় এক লেখা শেষ না করতেই আরেক লেখার আইডিয়া মাথায় ঢুকে যায়। এটা ছেড়ে ওটা ধরে কোনটাই আর হয়না। কাকের রচনা শিরোনাম দিয়ে লেখা শুরু করলে তখন মাথায় ঘুরঘুর করে কুকুরের কথা। কাক বাদ দিয়ে কুকুর নিয়ে কয়েক লাইন লিখলে মনে হয় কুমির নিয়েও লেখা যায়। এরকম তিন প্রাণী নিয়ে একসাথে ভাবতে ভাবতে কোনোটা নিয়েই লেখা হয়না। এক রাতের কথা- রম্যগল্প লেখার ভাবনা নিয়ে লিখতে বসে যে যে আইডিয়া ঢুকে গেল তা একসাথে জোড়াতালি দিয়ে এই লেখা।
লোকে বলে, কবি কবি ভাব 
কবিতার অভাব। আমার হয়েছে সেই দশা 
পাইনা খুঁজে আইডিয়া 
লেখি তাই যাচ্ছে তাই লেখা।
নো রিড ওনলি কমেন্টস পাঠক 
বিভিন্ন ইন্টারনেট মাধ্যম বিশেষ করে ব্লগে এ টাইপের পাঠকদের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। এদের বৈশিষ্ট এবং গুণাবলী হচ্ছে তারা ব্লগে পোস্ট হওয়া সকল লেখা না পড়েই কমেন্টস করতে পারেন। এদের চেনার উপায় মাঝে মাঝে দেখতে পাবেন কোনো কোনো নারীর পোস্ট করা লেখায় কমেন্টস, ভাই লেখাটা দারুণ হয়েছে। আরো দেখবেন একজন লেখা পোস্ট করেছে স্বজনের মৃত্যুর সংবাদ জানিয়ে সেখানে কমেন্টস, ভালো লাগলো।
লেখাটির সাথে আরো কিছু লাইন যোগ করা যায় মনে হয়ে কথা গুলো হারিয়ে ফেললাম। খুজতে শুরু করলাম। খুঁজে পেলাম ঠিকই তবে তা অন্য কিছু। যা পেলাম তা হলো, কিছুদিন আগে লিখব লিখব করে না লেখা হারিয়ে ফেলা একটি আইডিয়া।
সেদিন এক ছোট ভাই আমার সাথে পরামর্শ করতে এলো, বিষয় অনলাইন পত্রিকা। প্রথমে আমাকে প্রশ্ন করলো, ভাই অনলাইন পত্রিকা খুলবো কিভাবে? আমি তাকে জানালাম, এ ব্যাপারে আমি সঠিক ভাবে কিছু জানিনা। তার কাছে আমি জানতে চাইলাম, অনলাইন পত্রিকা খোলার আগ্রহ হলো কেন? উত্তরে জানলাম, তার ক'জন বন্ধু একটি অনলাইন পত্রিকায় নাকি জব করে। তার সেই বন্ধুরা অনলাইন পত্রিকা থেকে পাওয়া সাংবাদিক পরিচয় পত্র দেখিয়ে সবখানে ভাব নেয়। এই ব্যাপারটা নিয়ে তার খুব হিংসে হয়। ছোট ভাইটির ধারণা তার যদি একটি সাংবাদিক পরিচয় পত্র থাকে সেও সব জায়গায় ভাব নিতে পারবে। এই কারণে সে ঠিক করেছে নিজেই অনলাইন পত্রিকা খুলবে এবং পরিচয় পত্র বানাবে। আমি তার এমন চিন্তা-ভাবনার কথা শুনে হতাশ হয়ে বললাম, অনলাইন পত্রিকা তো চাইলে তুমি খুলতে পারবা তবে শুধু খুললেই তো হবেনা। সেটা পরিচালনা করতে সাংবাদিক নিয়োগ করতে হবে। সব মিলিয়ে অনেক খরচ। প্রশ্ন করলাম, এই খরচ তুমি বহন করবে কিভাবে? উত্তরে ঘরে বসে একাই অনলাইন পত্রিকা পরিচালনার যে আইডিয়া তার কাছে জানলাম তা আর লিখলাম না।
বর্তমানে যেভাবে অনলাইন পত্রিকা বাড়ছে এভাবে চলতে থাকলে সবাই হয়ে যাবে সাংঘাতিক থুক্কু সাংবাদিক। পাঠক পাওয়া যাবে না। যারা সাংবাদিকের 'স' বোঝেনা তারা হচ্ছে অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক। এই হচ্ছে অবস্থা। এখন মানুষ বেশি ডিজিটাল হইয়্যা গেছে। ক্লিক করলেই যা ইচ্ছা হওয়া যায়। এই যেমন, ফেইসবুক প্রফাইলে ড্রাইভার হলেও লিখে দেয়া যায় গাড়ির শো-রুমের মালিক।
এই পুরো লেখাটির সাথে আরো কিছু জোড়াতালি দিতে চেয়েছিলাম। পরে আবার মনে হলো আরো জোড়াতালি দিলে যারা পড়বে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট হবে। এতটুকুতেই না জানি কার কার বিরক্তির কারণ হয়েছি। ব্যাস! ভয়ে থেমে গেলাম।

Comments

Popular posts from this blog

dil dia jare valobasilam(দিল দিয়া যারে ভালবাসিলাম) lyrics

ইঞ্জিন এবং মেশিনের মধ্যে পার্থক্য কী? difference between machine and engine ??